কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনায় গ্রেফতার ইকবালকে ‘ভবঘুরে’ বলে তার অপরাধ বা পরিস্থিতিকে লঘু করে দেখার অবকাশ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
শুক্রবার এক কর্মী সমাবেশে মেনন বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে- কুরআন অবমাননার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি হিন্দু নয়, মুসলমান। কিন্তু এখন আর তথাকথিত ধর্মপ্রেমীদের মুখে কথা নেই। আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি, সব ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। আটক ইকবালের পেছনে কারা আছে, সেটা উদঘাটন করতে হবে।
বরিশালের উজীরপুর উপজেলার ধামুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর উজীরপুর উপজেলার এক কর্মী সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
মেনন বলেন, দেশের তরুণ সমাজ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। অথচ তাদের মধ্যেই এখন সাম্প্রদায়িক মানসিকতার বিকৃতি ঘটেছে। স্বাধীনতার পরে রাষ্ট্রীয় মদদে মানুষের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের শুরু হয়, তাই আজ গোটা সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে।
সাবেক এই মন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক বৈষম্য, লুটপাট, দুর্নীতি, বেকারত্ব জনমনে যে হতাশার সৃষ্টি করেছে, তার ফলে যুব সমাজ ধর্মবাদী-মৌলবাদী-জঙ্গিবাদী প্রচারণায় বিভ্রান্ত হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় যুবসমাজের কর্মের নিশ্চয়তার দাবিকে অভিন্ন দাবিতে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা।
উল্লেখ্য, গেল বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাত ১০টার পর সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে ইকবালকে গ্রেফতারের কথা জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম (ক্রাইম অ্যান্ড অ্যাডমিন)।কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ বলেন, কক্সবাজারে গ্রেফতার ওই যুবকই কুমিল্লার ইকবাল। তাকে সিসি ক্যামেরায় ভিডিও দেখে শনাক্ত করা হয়েছিল।
গ্রেফতার ইকবাল কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড সুজানগর এলাকার মাছ বিক্রেতা নূর আলমের ছেলে।গ্রেফতারের পর তাকে কুমিল্লায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়া দীঘিরপাড় এলাকায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার খবরে নগরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এ ঘটনায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, মন্দির ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
সূত্র: যুগান্তর