শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন

একসঙ্গে দুই বোনের বিষপান, বড় বোনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৯৬ বার পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:২৮ অপরাহ্ন

বাবা কামাল জোমাদ্দার ও মা সাহেরা বেগমের দ্বন্দ্বের জেরে দুই কন্যা মহিমা আক্তার (১৩) ও সুমাইয়া (৭) বিষপান করেছে। বড় মেয়ে মহিমা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ছোট মেয়ে সুমাইয়া চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে উপজেলার পুজাখোলা গ্রামের কালাই জোমাদ্দারের ছেলে কামাল জোমাদ্দারের সঙ্গে একই গ্রামের আকব্বর মৃধার মেয়ে সাহেরা বেগমের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির এক ছেলে ও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। এক বছর আগে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। তাদের দাম্পত্য কলহ চরম আকার ধারণ করে।

তিন মাস আগে স্ত্রী সাহেরা বেগমকে স্বামী কামাল বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠক হয় কিন্তু তাদের দ্বন্দ্ব নিরসন করতে পারেননি স্থানীয়রা। বাবা ও মায়ের এমন দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই দম্পতির দুই মেয়ে মহিমা ও সুমাইয়া সোমবার বিকালে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় বলে জানান স্থানীয়রা।

ওই সময় বাবা কামাল জোমাদ্দার ও ভাই জাহিদুল কৃষিকাজে মাঠে ছিলেন। ওই দিন সন্ধ্যায় তারা ঘরে ফিরে দুই বোনকে বমি করতে দেখেন। তাৎক্ষণিক দুই বোনকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে বড়বোন মহিমা মৃত্যুবরণ করে এবং ছোটবোন সুমাইয়া চিকিৎসাধীন রয়েছে। ওই হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকালে মহিমার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় বরিশাল কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, বাবা ও মায়ের দ্বন্দ্বের জেরেই দুই অবুঝ শিশু বিষপান করেছে। এর মধ্যে বড়বোন মারা গেছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে বাবা ও মায়ের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান তারা।

কামাল জোমাদ্দারের চাচা ছালাম জোমাদ্দার বলেন, মহিমার বাবা ও মায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলে আসছে। ওই কলহের কারণে মা সাহেরা বেগম গত তিন মাস ধরে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। সম্ভবত বাবা মায়ের কলহের জের ধরেই সোমবার সন্ধ্যায় দুই বোন বিষপান করেছে।

নিহত মহিমার নানা শহীদ মৃধা বলেন, জামাতা কামাল জোমাদ্দার আমার ভাইয়ের কাছে যৌতুক দাবি করে আসছে। ওই টাকা না দেয়ায় গত তিন মাস পূর্বে আমার ভাতিজিকে মারধর করে বাবার বাড়িতে তুলে দিয়ে যায়। বাবার এমন কাজের প্রতিবাদ করে বড় মেয়ে মহিমা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবা কামাল জোমাদ্দার মেয়ে মহিমাকে প্রায়ই মারধর করত। বাবার মারধর সহ্য করতে না পেরে মেয়ে মহিমা ও সুমাইয়া বিষপান করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খবর: যুগান্তর


এ জাতীয় আরো খবর ....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Translate »
Translate »