কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেই সাথে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর সারিও। ৫০শয্যার দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন করোনা রোগীর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিণত হয়েছে। বেডে জায়গা না পেয়ে মেঝেতে গাদাগাদি করে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবে চিকিৎসা সেবা ও করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ যাবৎ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং আশংকাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার্ড করার পর করোনা আক্রান্ত এসব রোগীর মৃত্যু হয়। রোববার রাতে সীমান্ত সংলগ্ন বিলগাথুয়া গ্রামের রুবিয়া খাতুন (৪০) করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। করোনা উপসর্গ নিয়ে আইয়ুব আলী নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন একই সময়। এছাড়াও দৌলতখালী গ্রামের মোহর আলী (৬৫) করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে মারা গেছেন। বর্তমানে করোনা আক্রান্ত হয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৭জন। এ পর্যন্ত দৌলতপুরে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১৬৮৩জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৯জনের। বর্তমানে ৬১৭জন করোনা আক্রান্ত রোগী হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছে। সুস্থ হয়েছে ১০০০জন। দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ঈদের পর দৌলতপুরের প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা উপসর্গ রোগী। আর এসব উপসর্গ নিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছ থেকে ওষুধ কিনে নিজের মত করে চিকিৎসা নেয়ায় ঝুকি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। দিন দিন রোগ পুশে রেখে একপর্যায়ে আশংকাজনক অবস্থার সৃষ্টি হলে তারা ছুটে যাচ্ছে হাসপাতালে। তখন চিকিৎসকদের আর কিছু করার থাকছে না। তাই বিশেষজ্ঞদের অভিমত করোনা উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসকদের পরমর্শ ও করোনা পরীক্ষা করে করোনার বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। পাশাপাশি সকলকে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এছাড়াও গ্রামের সাধারণ মানুষ করোনা স্বাস্থ্য বিধি না মানা, মাস্ক ব্যবহার না করার কারনে এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে পাড়া মহল্লায় একত্রে বসে আড্ডা, খেলা করা ও চা পানে মত্ত হওয়ার কারনে গ্রাম পর্যায়ে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে বলেও বিশেষজ্ঞদের অভিমত।