রমজানে প্রাথমিক স্কুলে ছুটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) গুজব ছড়ানোর অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে মানিকগঞ্জের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে।
রমজান মাসে প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে শ্রেণি কার্যক্রম ২০ রমজান পর্যন্ত চালু রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ষ্ট্যাটাস দেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বান্দুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিপ্রা রানী সরকার।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী বলেছেন , সরকারি সিদ্ধানের বিপরীতে অবস্থান নেওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ২৯ মার্চ বহিস্কার পত্রে তিনি স্বাক্ষর করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষিকা তার নিজস্ব ভেরিফাইট ফেসবুক পেইজে গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর ছবিসহ ষ্ট্যাটাস দেন। ‘অবশেষে প্রথম রোজা থেকেই সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিলেন দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এ উদার সিদ্ধানের জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আপনার জয় হউক। আরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক ভাইকে এ জয়ের পথের সারথি ভুমিকা অবতীর্ণ হওয়ার জন্য।’
অথচ সরকারি ভাবে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কোন সিদ্ধান হয়নি। যা নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়ার দেখা দেয়।
গত ২৯ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী স্বাক্ষরিত বরখাস্তের অফিস আদেশে উল্লেখ্য করা হয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ষ্ট্যাটাস সরকারি প্রতিষ্টানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা ,২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ) এর ২ (ক) সুস্টষ্ট লঙ্ঘন। তার এই অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ষ্ট্যাটাসের কারণে প্রাথমিক শিক্ষার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তার উল্লেখিত ষ্ট্যাটাস সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) মোতাবেক অসদাচরনের সামিল।
এছাড়া আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের ভাবমুর্তি প্রাথমিক শিক্ষার ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খা ও আপিল) বিধান, ২০১৮ এর বিধি ১২ (১) এবং সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯ ধারা মোতাবেক ওই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ ব্যাপারে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া বান্দুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিপ্রা রানী সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সূত্রঃ যুগান্তর