দেশের প্রথম মেট্রোরেলের (এমআরটি-৬) পরীক্ষামূলক আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আজ। উত্তরা দিয়াবাড়ি মেট্রোরেলের ডিপোয় সকাল ১০টায় পরীক্ষামূলক কাজের উদ্বোধন করবেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর শুক্রবারের মতো আজও ৬টি বগি নিয়ে মেট্রোরেল ভায়াডাক্টে (মেট্রো লাইন) চলাচল করবে। দিয়াবাড়ি ডিপো থেকে মিরপুরের পল্লবী হয়ে আবার ডিপোয় ফিরে যাবে ট্রেন।
বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল বাস্তবে রূপ পেতে যাওয়ায় খুশি রাজধানীবাসী। শুক্রবার সকালে ভায়াডাক্টে মেট্রোরেল দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ওই এলাকার মানুষ। বাসাবাড়ি থেকে, কেউ বাসার ছাদ থেকে ট্রেন চলার ছবি তুলেছে, কেউ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছেন। বর্তমান সরকারের গৃহীত এ পদক্ষেপ আলোর মুখ দেখায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) প্রকল্প পরিচালক এবিএম আরিফুর রহমান শনিবার যুগান্তরকে বলেন, আগামীকাল (আজ) মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিকভাবে ভায়াডাক্টে উঠবে। ট্রেনটি উত্তরা দিয়াবাড়ি ডিপো থেকে মিরপুর-বিআরটিএ পর্যন্ত পরিচালনা করা হবে। এখন মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। সে কারণে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ভায়াডাক্ট (মেট্রো লাইন) গুলোর ত্রুটি আছে কিনা, সেটা যাচাই করে দেখছেন।
আরিফুর রহমান বলেন, দিয়াবাড়ি ডিপোতে আনুষ্ঠানিকভাবে মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টে ট্রেনের বগির পারফরম্যান্স টেস্টের উদ্বোধন করবেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী। শুক্রবারের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম আমরা প্রচার করতে চাইনি। এজন্য আমরা খুব ভোরে ট্রেন ভায়াডাক্টে উঠানোর চেষ্টা করেছি। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সকালে ট্রেন চালানো হয়েছে। এতে এটা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে।
এর আগে ২১ এপ্রিল এমআরটি-৬ এর প্রথম ট্রেনসেট ঢাকায় পৌঁছায়। প্রথম সেটে ৬টি কোচ ও শিফটিং জিক নিয়ে দুটি বার্জ ঢাকায় পৌঁছায়। পরে ধাপে ধাপে অন্য ট্রেনসেট (বগি) ঢাকায় এসেছে। আরও আনার প্রক্রিয়া চলমান। দেশের প্রথম এই মেট্রোরেলে থাকবে ২৪টি ট্রেনসেট। প্রতিটি ট্রেনসেটের ৬টি করে ১৪৪টি কোচ থাকবে। প্রতিটি ট্রেনসেটে যাত্রী পরিবহণ ক্ষমতা ২ হাজার ৩০৮ জন। ঘণ্টায় মেট্রোরেল উভয়পাশে যাত্রীপরিবহণ করবে প্রায় ৬০ হাজার।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, এমআরটি-৬ সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। প্রথম পর্যায়ের নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব হতে আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজ শেষ হয়েছে প্রায় শতভাগ। দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি হয়েছে অর্ধেকের বেশি। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
খবর: যুগান্তর