শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

সীমাহীন ভোগান্তি নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৫৬৯ বার পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১, ৯:২৮ পূর্বাহ্ন

স্বজনদের সঙ্গে ঈদের দিনটি উদযাপনের আকাঙ্ক্ষা ইট-পাথরের হৃদয়হীন শহরে আটকে থাকা মানুষগুলোর। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে, ঈদের পর টানা লকডাউনের আতঙ্ক। ফলে করোনার বাধাও এখানে তুচ্ছ।

সবমিলিয়ে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এই যাত্রায় ভোগান্তি সীমাহীন। যানবাহনের চরম সংকট, অসহ্য গরম, আবার হঠাৎ বৃষ্টি এবং তীব্র যানজট। এক্ষেত্রে ঢাকা থেকেই শুরু হয় যানজট। এছাড়া পথে পথে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়টি মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। কোথাও সামাজিক দূরত্ব নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন ছাদে কিংবা ইঞ্জিন কভারে।

আবার টার্মিনালে পড়তে হচ্ছে নানা ঝামেলায়। কোথাও কোথাও হেঁটে পাড়ি দিচ্ছে দীর্ঘপথ। তবে নানা বিড়ম্বনার মধ্যেও যেন আলাদা আনন্দ খুঁজে পাচ্ছেন যাত্রীরা। শেকড়ের টানে আপন ঠিকানায় বাঁধভাঙা স্রোতের মতো ছুটছে অবিরাম।

রাজধানীর কমলাপুরের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট এবং মহাসড়ক ঘুরে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। তবে সরকার বলছে, যাত্রীদের দুর্ভোগ আগের চেয়ে কম। তারা যানজট ও যাত্রীদের দুর্ভোগ নিসরনে কাজ করছে।

আগামীকাল বুধবার পবিত্র ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। তবে করোনার কারণে গত বছরের মতো এবারের কুরবানির প্রেক্ষাপটও একটু ভিন্ন। টানা লকডাউনের পর গত ১৫ জুলাই থেকে লকডাউন শিথিল করে সরকার।

২৩ জুলাই থেকে সরকারের পক্ষ থেকে আবারও কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে সীমিত সময়ের মধ্যে নিজ নিজ কাজে নেমে পড়ে মানুষ। কুরবানির পশু, পোশাক ও নিত্যপণ্যের বেচাকেনাসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়।

গণপরিবহণ ছেড়ে দেওয়ায় শুরু বাড়ি ফেরার কার্যক্রম। আর ঈদের আগে ২ দিনে ছিল ব্যাপক ভিড়।

সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী: সোমবার সকাল থেকেই সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে নিয়মিত অতিরিক্ত যানবাহন ছাড়া শুরু করেছেন বাস মালিকরা। যাত্রীদের চাপ বেশি থাকলে ঈদের আগের দিন দুপুর পর্যন্ত একইভাবে অতিরিক্ত পরিবহণ চলবে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাচ্ছেন।

গাবতলী: রাজধানীর অন্যতম এই বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য যাত্রীদের ৪ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১৫শ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। বাসের কাউন্টারগুলোতে ব্যাপক ভিড় ছিল। যাত্রীদের জন্য টিকিটের ছিল ব্যাপক কাড়াকাড়ি। দূরপাল্লার যাত্রার জন্য আগে যারা টিকিট নিয়েছেন তারাও নির্ধারিত সময়ে এসে গাড়ি পাননি।

সদরঘাটে: লঞ্চে ডেকে যাত্রীদের তুলনামূলকভাবে ভিড় ছিল বেশি। সেখানে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই তেমন গুরুত্ব ছিল না। তবে সামাজিক দূরত্ব না থাকলেও যাত্রীদের কাছ থেকে ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে।

লঞ্চগুলোতে কেবিনের সংকট চরমে। লঞ্চে তিন ধরনের টিকিট থাকে। ডেক, সোফা এবং কেবিন। ডেকের জন্য আগে কোনো টিকিট কাটতে হয় না। এরা লঞ্চের ফ্লোরে চাদর বিছিয়ে যায়। আর সোফার জন্য এবং কেবিনের জন্য আগে বুকিং দিতে হয়। আবার কেবিনও দুই ধরনের। নরমাল এবং ভিআইপি।

বিভিন্ন কাউন্টার ঘুরে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগেই সব লঞ্চের ভিআইপি টিকিট শেষ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও প্রভাবশালী মহল এসব টিকিট বুকিং দিয়ে রেখেছেন। কোনো তদবির ছাড়া সহজে নরমাল কেবিনও মিলছে না।

তবে সোফার টিকিট লঞ্চঘাটেও বিক্রি হচ্ছে। সোমবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, দুপুর থেকেই যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। এদিকে ঈদযাত্রায় নৌপথে যাত্রী ভোগান্তি এড়াতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিএ।

কমলাপুর স্টেশন: স্বাভাবিক সময়ে প্রতি ঈদে কমলাপুর থেকে প্রতিদিন ১৭৭টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত। এখন ৫৭টি ট্রেন চলছে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। ফলে এখানে ভিড় কম। তবে ট্রেনের টিকিটধারী যাত্রী ছাড়াও সাধারণ লোকজন স্টেশনে আসছে।

মেইল ও কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাটছে অনেকে, কিন্তু সীমিত টিকিট থাকায় অনেকে টিকিট কাটতে পারছে না। অনেকে বিনা টিকিটে স্টেশনে প্রবেশ করতে চাইলেও মূল প্রবেশপথে আটকে দেওয়া হচ্ছে।


এ জাতীয় আরো খবর ....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Translate »
Translate »