এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলা মাসের পহেলা ফাল্গুন। ফেব্রুয়ারির এই দিনটিকে বিশ্বব্যাপী অনেকেই পালন করে ভালবাসা দিবস হিসেবে। ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ বাঙালির অহংকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এইদিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয় ভাষা শহীদদের। সব মিলিয়ে বছরের এই মৌসুমে ফুল চাষি ও ব্যবসায়িদের জন্য বানিজ্যিক সর্বোত্তম সময়। এছাড়া ব্যবসা হয় ইংরেজি নতুন বছর ও বাংলা নববর্ষে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ফুল চাষিদের মতো কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ফুল চাষিরাও কাটিয়েছেন সুবর্ণ সময়। উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে গাদা, রজনীগন্ধা ও গোলাপ চাষ করে বছর দুয়েক আগেও চাষিরা বার্ষিক আয় করেছে বিঘা প্রতি প্রায় দেড় লাখ টাকা।
অকল্পনীয় করোনার আগ্রাসি আক্রমণে কাঁচা ফুলের ব্যাবসায় এনে দিয়েছে স্থবিরতা। অনেকেই পুজি হারিয়ে নিঃস, কেউ কেউ বেছে নিয়েছে বিকল্প ফসল।
দৌলতপুরের কৃষিতে কয়েক হেক্টর জমির নতুন উদ্যোক্তা ফুল চাষি থাকলেও তা এখন শূন্যের কোঠায়।
দৌলতপুর ও আশপাশের এলাকার ফুলের চাহিদা মেটাচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদাসহ অন্যান্য ফুল। এসব ফুলের খুঁচরা বাজারদরও অনেক চড়া।
রোববার উপজেলাটির বিভিন্ন বাজারে রজনীগন্ধা বিক্রি হয়েছে ১২ থেকে ১৫ টাকা দরে, গোলাপের জোড়া ৫০ – ৬০ টাকা গাঁদার দামও সাধারন সৌখিনদের নাগালের বাইরে।
এসব প্রসঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় বছর দু’এক আগে কয়েক হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফুলের চাষ হতো। তবে এবার তেমন একটা হয়নি। তিনি আরো জানান, চাষিরা যদি আবারও ফুল চাষে আগ্রহী হয় তাহলে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে পাশাপাশি প্রণোদনার আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে।
মৌসুমে ফুলের বাজারের খবরাখবর নিতে গেলে হতাশাজনক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে ফুল চাষি বেলাল হোসেন জানান, বেশ কিছু ধরনের ফুল চাষের জন্য দৌলতপুরের মাটি উপযুক্ত। নিয়ম মতো চাষ করতে পারলে এটি একটি লাভ জনক কৃষি উৎপাদন। করোনা সংক্রান্ত স্থবিরতা না থাকলে দৌলতপুরে ফুল চাষ আরও বৃদ্ধি পেতো।
উপজেলার অধিকাংশ ফুল চাষি বিক্রয় সঙ্কটের কারণে লোকসানে পড়েছেন। সম্ভাবনাময় এই খাতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেন উপজেলার আরেক ফুল চাষি হাবিব।
সৌখিন চাষিদের সফলতার মাইলফলক ধরে দৌলতপুরের ফসলের মাঠে ফুল চাষে বাণিজ্য বিপ্লবের অপার সম্বাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। দরকার কেবল নিয়মিত বাজার এবং সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ।