বিএনপচয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবীতে বুধবার ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি’র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বাবু নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন,হাসিনার বিরুদ্ধে জনতার সাগরে ঢেও জেগেছে।এই উত্তাল ঢেওয়ে হাসিনা ও তার দুর্নীতিবাজ সরকার বঙ্গপোসাগরে ভেসে যাবে।তিনি বলেন শেখ হাসিনা জোয়ার দেখেছে,কিন্তু ভাটা দেখেনি। ভাটার টান শুরু হয়েছে।এই টানে হাসিনা সগরে নিক্ষিপ্তি হবে।নিতাই রায় চৌধুরী বুধবার ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি আয়োজিত এক বিরাট সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দানকালে এ কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকৎসার দাবীতে ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী মাঠে জেলা বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড এস এম মশিয়ূর রহমান।অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা,সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য মসিউর রহমান,খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত,বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড আসাদুজ্জামান,কেন্দ্রীয় নেতা বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল,সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টু,আব্দুল ওহাব,সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, এ্যাড এম এ মজিদ,মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু,আব্দুল আলীম ও আব্দুল মজিদ বিশ্বাস প্রমুখ।এছাড়া আশপাশ জেলা থেকে বিএনপির অর্ধশত নেতা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।প্রধান অতিথি নিতাই রায় চৌধুরী বলেন,দেশে আজ কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই।গনতন্ত্র,শিক্ষা, মানবাধিকার,সংবাদপত্রের স্বাধীনতা,বিচার ব্যবস্থা,পুলিশ,র্যাব, সেনা বাহিনী সব কিছুই হাসিনা ধ্বংস করে দিয়েছে।প্রশাসন দিয়ে গুম খুন করিয়ে মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে।বাংলার মাটিতে হাসিনার বিচার হবে।তিনি অভিযোগ করে বলেন,আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের দল নয়।তারা ভারতের ট্রেনিং ক্যাম্পে বসে বসে রেশন খেয়েছে আর নারী নিয়ে ফুর্তি মেরেছে।শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতা ঘোষনা তো দুরের কথা সেচ্ছায় পাকিস্থানীদের হাতে ধরা দিয়ে আরাম আয়েশে দিন কাটিয়েছেন। অথচ শেখ মুজিবকে আজ মুক্তিযুদ্ধের বড় ফেরিওয়ালা বানিয়েছে হাসিনা।নিতাই রায় চৌধুরী বলেন শেখ হাসিনা ও তার পিতা কোনদিন গনতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি।তাদের শাসন আমল তার প্রমান বহন করে।সিরাজ শিকদার বিভিন্ন মতের হলেও তার দেশপ্রেম ছিল অতুলনীয়।অথচ শেখ মুজিব তাকে হত্যা করে সংসদে দম্ভক্তি প্রকাশ করে বলেছিল“কোথায় আজ সিরাজ শিকদার”? অত এই দলটির নেতারা আজ মানুষকে গনতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার সবক দেয়। যারা অসুস্থ খালেদা জিয়াকে ভয়ে ভীত তারা সুস্থ বিএনপি লাখো নেতা কর্মীকে কি ভাবে সামলাবেন। সমাবেশে মসিউর রহমান বলেন রক্তের অপর নাম কিন্তু মুক্তি।১৯৭১ সালে রক্ত দিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম।শেখ হাসিনার এ কথা মনে রাখা দরকার।মসিউর বলেন, ভারতের মদি সরকারের সঙ্গে অনেক পিরিত করেছিলেন,এখন কিন্তু সেই মোদি সরকার বাইডেনের সঙ্গে।হাসিনাকে ছুড়ে ফেলেছে।তিনি বলেন হাসিননার জন্য পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে।মসিউর বলেন, ওবাইদুল কাদের ও হাসান মাহমুদকে দিয়ে অর্নগল মিথ্যা বলিয়েও হাসিনার শেষ রক্ষা হবে না। মানুষ জেগেছে।পালানোর সব পথ বন্ধ করে দেবে দেশের জনগন। অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দীন সমাবেশে বলেন,পতনের ডাক কি পুলিশ ও হাসিনা সরকার শুনতে পাচ্ছে না ? সময় ঘনিয়ে এসেছে।আকাশে কালোমেঘ।হাসিনা ও তার দোসররা পালানোর জন্য পথ খুজছে। বিএনপির মানবাধিকার সম্পাদক এ্যাড আসাদুজ্জামান পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন,আপনারা তো ডাম্পিং পোস্টিং নিয়ে ঝিনাইদহে এসেছেন।এখানে কেন আপনারা দলীয় ক্যাডারদের মতো আচরণ করেন ? আপনাদের দিয়ে ৬০১ জনকে গুম করেছে।তিন হাজার মানুষ বিনা বিচারে হত্যা করেছে।৩৬ লাখ বিএনপি নেতা কর্মীদের নামে মামলা করিয়েছে।এখানেই থামুন, নইলে পস্তাবেন।খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আইনমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, বিনা ভোটের সরকারের আইনী যুক্তি দেখতে দেখতে মানুষ আজ বিরক্ত। তিনি প্রশ্ন করে বলেন,কুইক রেন্টালে হাজার হাজার কোটি লুট হয়, কাঁটাতারে ফেলানীর লাশে ঝুলে থাকে,ব্যাংক ঋনের নামে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয় সেদিন কোথায় থাকে আপনাদের আইন ?তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন,এটা ঊনবিংশ বা বিংশ শতাব্দী নয়,এটা একাবিংশ শতাব্দি। তরুনদের সাথে প্রবিনরা যুক্ত হয়ে যদি প্রতিবাদের বিস্ফারণ ঘটায় তখন আপনারা পালানো পথ পাবেন না।তিনি বলেন,সরকার যদি আইন দিয়ে দেশ চালাতো,তবে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেতেন।যেমন জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষনার সময় কোন আইন লাগেনি।তিনি বলেন সরকারের লোকজন ও দলীয় নেতাকর্মী পালানোর পথ খুজছেন। আমেরকিা,কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া বন্ধ হয়ে গেছে।এখন মালদ্বীপের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে।আসলে এই চুক্তি হচ্ছে আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়লে তারা মালদ্বীপে পালিয়ে যেতে চাই।অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন,বিএনপিকে এখন কোন বাধায় আর ঠেকাতে পারবে না।জেলা উপজেলা থেকে যে আন্দোলন শুরু হয়ে অচিরেই তার ঢেও আছড়ে পড়বে রাজধানী ঢাকায়।